প্রকাশিত: ০৫/০৫/২০১৮ ১২:১৯ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৩:১৭ এএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কানাডা কাজ করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

রোহিঙ্গা নিধনকে জাতিগত নিধনের প্রামাণ্য দলিল উল্লেখ্য করে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড বলেছেন, ‘এই নিধনযজ্ঞের জন্য দায়ীদের নাম বিশ্বকে জানতে হবে, তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন: রোহিঙ্গাদের জন্য মানবতার হাত বাড়িয়ে বাংলাদেশ বর্তমান বিশ্বে অনন্য এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।

ঢাকায় ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৫তম সম্মেলন ‘ওআইসি কাউন্সিল অব ফরেন মিনিস্টার্স (সিএফএম)’ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি নিজে তিন সন্তানের মা জানিয়ে সম্মেলনে বলেন: রোহিঙ্গা শিশুদের দুর্দশা দেখে আমিও কান্না সামলাতে পারিনি। রাখাইনের সহিংসতার সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ হলো ধর্ষণ। জেনেছি সেখানে টয়লেট পর্যন্ত ধ্বংস করা হচ্ছে যাতে নারীরা খোলা জায়গায় যেতে বাধ্য হয়। নিজেরা যেনো ধর্ষকদের দৃষ্টিতে আকর্ষণীয় না হন সেজন্য তারা গায়ে কাদা-মাটি মেখে থাকছে।

কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এবং তাদের প্রতি কানাডার অবস্থান স্পষ্ট করে বলেন: আমি রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে গিয়েছি। এখনো প্রতিদিন মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা আসছে। এর মানে হচ্ছে এখনো তাদের ওপর সহিংসতা চলছে। তাই বিশ্ব সম্প্রদায়কে রাখাইন রাজ্যে মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহিতা আদায় করতে হবে এবং অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধে সক্রিয় হতে হবে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এর নেয়া পদক্ষেপের সঙ্গে কানাডা সব সময়ই আছে বলে জানান তিনি।

রোহিঙ্গাদের দায় শুধু বাংলাদেশের নয়, এটা পুরো বিশ্বের দায় উল্লেখ্য করে ফ্রিল্যান্ড বলেন: এই সংকটে বাংলাদেশ ও শুধু মুসলিম দেশগুলো নয় আমাদের মতো নন-মুসলিম দেশগুলোকেও এই সহিংসতা বন্ধ এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ভূমিকা রাখতে হবে।’

এ বছরের আয়োজনে ওআইসি’র সব সদস্য রাষ্ট্র ও পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র, ওআইসিভুক্ত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রের প্রধানসহ ৫৫০ জন প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছে। তাদের মধ্যে বিভিন্ন দেশের ৪০ জন মন্ত্রী ও সহকারি মন্ত্রী অংশগ্রহণ করছেন এ সম্মেলনে।

এবারের সম্মেলনে প্যালেস্টাইনের জনগণের ‘ন্যায়সঙ্গত’ অধিকারের বিষয়টি বরাবরের মতোই গুরুত্ব পাবে। এছাড়া বর্তমানে মুসলিম বিশ্বের বেশ কিছু দেশ শান্তি,নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় হুমকি, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, বাইরের হস্তক্ষেপ, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, ইসলামোফোবিয়া (ইসলামঅভীতি) এবং মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন। এই পরিস্থিতিতে এই সম্মেলন তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করে বাংলাদেশ।

সম্মেলনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মুসলিম দেশগুলোকে সক্রিয়ভাবে পাশে থাকার আহ্বান জানানো ছাড়াও বাংলাদেশের অন্যান্য প্রস্তাবনাগুলো হচ্ছে: সম্মেলনে আলোচ্য বিষয়ের সব সিদ্ধান্ত, ঢাকা ঘোষণাপত্র আউটকাম ডকুমেন্ট হিসেবে সংরক্ষিত হবে।

মুসলিম দেশগুলোর নিজেদের মধ্যে কানেক্টিভিটি, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার বিষয়ে মিডিয়ার ব্যবহার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ওআইসি চেয়ার প্রতিষ্ঠাসহ কয়েকটি প্রস্তাব করবে বাংলাদেশ।চ্যানেল আই

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির আশা বাংলাদেশ-গাম্বিয়ার

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ ও গাম্বিয়া। ...

কারামুক্ত হলেন মামুনুল হক

হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক কারামুক্ত হয়েছেন। শুক্রবার (৩ মে) সকাল ...

সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উখিয়ায় হবে উন্মুক্ত কারাগার, শিগগির নির্মাণ শুরু

উন্নত দেশের ন্যায় বাংলাদেশে উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ...